স্বদেশ ডেস্ক: সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় খাতের প্রতিষ্ঠান আরামকো পরিচালিত দুটি তেল শোধনাগারে হামলার পর আরামকো জানিয়েছে এশিয়ার অনন্ত ছয়টি রিফাইনারি তেল কোম্পানি অক্টোবরের জন্য যে পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বরাদ্দ করা আছে তার পুরোটাই সরবরাহ করা হবে।
যদিও একটি কোম্পানিকে বলা হয়েছে তেলের মান সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। সৌদি আরব থেকে এশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশও আছে। গত শনিবার এই হামলার পর সৌদি আরব বলছে তাদের সংরক্ষণাগারে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে, সেটা দিয়ে তারা তাদের ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারবে।
হামলার পর সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এই প্রথমবারের মত এশিয়ার শীর্ষ ক্রেতাদের কাছে ইঙ্গিত দেয়া হল যে তেলের সরবরাহ স্থিতিশীল থাকবে। এই দেশগুলোতে সৌদি আরব তার মোট রপ্তানির ৭০%-ই দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) অক্টোবরের জন্য বরাদ্দকৃত জ্বালানি তেলের সম্পূর্ণটাই পাবে।
এই কর্মকর্তা বলেছেন ‘গতকাল আমাদের পরবর্তী চালান নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা আমাদের নিশ্চিত করেছে তেল পৌঁছাতে কোন দেরি হবে না’। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সৌদি আরবের আরামকো থেকে বার্ষিক ৭ লাখ টন আরব লাইট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে।
এদিকে, অন্য একটা কোম্পানিকে বলা হয়েছে কার্গোতে দেরি হতে পারে তবে অক্টোবরে জন্য তেলের পরিমাণ এবং মান একই রকম থাকবে।
ভারতের তিনটি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়ম কর্পোরেশন লি. এবং ম্যানগালোর রিফাইনারি এন্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড-এই তিনটি কোম্পানি রয়টার্সকে জানিয়েছে সৌদি আরব থেকে অক্টোবরের জন্য তাদের চাহিদা অনুযায়ী পুরোটাই পাবে।
কিন্তু আরামকো ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন কে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা আরব মিক্স অয়েল-এর পরিবর্তে কিছু পরিমাণ আরব হেভি অয়েল। যদিও রয়টার্স তাদের সংবাদসূত্র উল্লেখ করেনি, কারণ গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার এখতিয়ার ঐ ব্যক্তির নেই। এটা ইঙ্গিত করে সৌদি আরব এখন ‘লাইট’ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পরিবর্তে ‘হেভি’ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রস্তাব করছে। কারণ আরব মিক্স তেল হলো লাইট এবং হেভির মিশ্রণ।
যদিও ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন থেকে তাৎক্ষণিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। শনিবারের হামলায় আবকাইক তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই শোধনাগারটিতে ঘাওয়ার, শাইবাহ এবং খুরাইস তেলক্ষেত্র থেকে পরিশোধন করে এবং ‘আরব লাইট’ বা ‘আরব এক্সট্রা লাইট’ উৎপাদন করে। চীন এবং তাইওয়ানের দুটি কোম্পানি জানিয়েছে, আরামকো তাদের বলেছে, তেলের চালানের সময়ের কোন পরিবর্তন হবে না।
এশিয়ার বাজারে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং থাইল্যান্ড সৌদি আরবের লাইট এবং আরব এক্সট্রা লাইট তেলের প্রধান ক্রেতা। সোল ভিত্তিক একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়াতে তেল সরবরাহের কোন বিঘ্ন হবে এমন কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।